গ্রীসে উসমানী আমলের মসজিদগুলো কেমন আছে

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: তুরস্কে ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়ার মসজিদে প্রত্যাবর্তন নিয়ে সমালোচনায় সবচেয়ে বেশী সোচ্চার ছিল পার্শ্ববর্তী খৃষ্টান দেশ  গ্রীস। কিন্তু খোদ গ্রীসে উসমানী আমলে নির্মিত মসজিদ এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো অধিকাংশই অবহেলিত অবস্থায় অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অথবা  এগুলো এমন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে যা স্থাপনাগুলোর জন্যে অপমানজনক।

কিছু মসজিদ তো চার্চে পরিণত করা হয়েছে নবায়নের নামে। অন্যান্য মসজিদ পরিণত করা হয়েছে নাইট ক্লাব, থিয়েটার, এবং  প্রাপ্তবয়স্কদের বিনোদনককেন্দ্রে।

গ্রীসে প্রায় ১০ হাজারের উপরে উসমানী আমলের ঐতিহাসিক ইসলামী স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে। গ্রীস যখন আয়া সোফিয়াকে নামাজের জন্য খুলে দেওয়ার কারণে সমালোচনা করেছিল তখন গ্রীসে অবস্থিত তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনগুলোর প্রতি অনেকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

১৪৬৮ সনে গ্রীসের থেসেলোনোকিতে হামজা বে মসজিদটি শুধু নামাজের জন্য ব্যবহৃত হত। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের কয়েক বছর পর মসজিদের মিনার যা পাথর কেটে নির্মাণ করা হয়েছে, ধ্বংস করে দেওয়া হল। মিনারার উপরে কারুকাজ এবং মূল্যবান পদার্থগুলো সরিয়ে ফেলা হল। ভেতরে কাঠের মিম্বার ধ্বংস করে দেওয়া হল। ১৯২৭ সনে গ্রীসের ন্যাশনাল ব্যাংকের মালিকানায় আসার পর মসজিদটি বিক্রি করে দেওয়া হল। সেখানে বানানো হল দোকান ও সিনেমা। ১৯৮০ পর্যন্ত মসজিদটি ব্যবহার হতে হতে লাগল প্রাপ্ত বয়স্কদের মুভি দেখানোর কাজে।

লোননিনা প্রদেশের নাদরা অঞ্চলের ফায়েক পাশা মসজিদও গীর্জায় পরিণত  করা হয়েছিল। ১৯৭০ সনে মসজিদটিকে বানানো হয়েছিল বিনোদনকেন্দ্রে। বর্তমানে মসজিদটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে।

একইভাবে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আরও শহরগুলোতেও মসজিদগুলো এরকমই পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এথেন্সে, যেখানে কোনো অফিসিয়াল মসজিদ নেই, উসমানী শাসনের পরে সেখানের সবচেয়ে পুরানো মসজিদটি ব্যবহৃত হত বিভিন্ন উদ্দেশ্যে, যারা মধ্যে সেনাবহিনীর কারাগার, এবং স্টোররুম হিসাবে ব্যবহার করার মত ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে।

রোমান আগুরায় অবস্থিত ফাতেহ মসজিদটি সম্পর্কে জানা যায় এটি উসমানি সুলতান মুহাম্মদ ২ এর আমলে নির্মিত হয়েছে। ২০১০ সাল নাগাদ মসজিদটি ব্যবহৃত হয়েছে স্টোররুম হিসাবে। ২০১৭ সালে এটি মেরামত ও সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে প্রদর্শনী হল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ফাতেহ মসজিদ থেকে কয়েক শ মিটার দূরে সিজডিরিয়া মসজিদ। মসজিদটি বছরের অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। মাঝেমাঝে যখন খোলা হয়, তখন সিরামিক্স জাদুঘর হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

গ্রীসে আরো অনেক মসজিদের কোনো সন্ধানই পাওয়া যায় না। অথচ ইতিহাসে সেসকল মসজিদের কথা লেখা আছে।  নতুন মসজিদ, গম্বুজ মসজিদ, আইকেল মসজিদ, হুসাইন আফেন্দী মসজিদ ইত্যাদি মসজিদগুলো তুর্কী উসমানি নথিপত্রে লেখা আছে। কিন্তু গ্রীসে এগুলো কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না।

সূত্র: ডেইলি সাবাহ

পূর্ববর্তি সংবাদকরোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জম্মু – কাশ্মিরে থেমে নেই ভারতীয় বাহিনীর অভিযান
পরবর্তি সংবাদবিএনপির সাবেক সাংসদ আশরাফ হোসেন মারা গেছেন