আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরায় গেল ভারতের ট্রানজিটের প্রথম চালান

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম নৌ বন্দর ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে পরীক্ষামূলক ট্রানজিটের পণ্য পরিবহন করেছে ভারত।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) সকালে আখাউড়া স্থলবন্দরে দুই দেশের আনুষ্ঠানিকতা শেষে চারটি লরিতে করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পৌঁছে।

ট্রানজিট পণ্য গ্রহণকালে আগরতলা প্রান্তে এক অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ট্রানজিটের নতুন পথের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারত উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

পণ্য পরিবহনের দায়িত্বে থাকা আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আক্তার হোসেন ও ভারতীয় পণ্য পরিবহনের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের ম্যাংগু লাইনের কর্মকর্তা মো. সোহেল খান তারা জানান, গত ১৪ জুলাই ভারতের কলকাতা হলদিয়া নৌ-বন্দর থেকে এমভি সেঁজুতি নামে একটি জাহাজ ডাল এবং স্টিলপাত (রড) বাংলাদেশের চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে জাহাজটি ২১ জুলাই বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নৌবন্দরে গিয়ে পৌঁছায়।

২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্যা ইউজ অফ চট্টগ্রাম অ্যান্ড মংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া চুক্তির আওতায় আর্টিক্যাল টু (অনুচ্ছেদ দুই) অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী এসব পণ্য বাংলাদেশের উপর দিয়ে নিয়ে যাবে ভারত। দুটি কন্টেইনারে ৫৩.২৫ মেট্রিক টন রড ও দুইটি কন্টেইনারে ৪৯.৮৩ মেট্রিক টন ডাল রয়েছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পণ্য পরিবহনে সহজ পথের বিবেচনায় আশুগঞ্জের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে চায় ভারত। এর আগে আশুগঞ্জ নৌ বন্দর ব্যবহার করে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের যন্ত্রের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য নিয়ে যায় ভারত। এখন থেকে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীও নিতে চায়। বিশেষ করে সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত ভারতের ত্রিপুরাসহ সাতটি রাজ্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিতে আগ্রহী হয়ে উঠে সে দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের চুক্তি হয়। চুক্তির আলোকে প্রথম পরীক্ষামূলক চালান হিসেবে রড ও ডাল নিল ভারত। পণ্য পরিবহনে রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ভারত সাত ধরণের ফি দিয়েছেন।

তার মধ্যে রয়েছে, ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি প্রতি চালান ৩০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি মেট্রিকটন ২০ টাকা, সিকিউরিটি চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা, অ্যাসকর্ট চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ৫০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ১০০ টাকা। কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি প্রতি কন্টেনার ২৫৪ টাকা। এছাড়া ইলেকট্রিক লক অ্যান্ড সিল ফি হিসেবে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারণ এর পরিমাণ বাধ্যতামূলক করা হয়।

এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রবেশে সাত দিনের মধ্যে ভারতে পণ্য প্রবেশ করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে সময় বাড়ানো যাবে। বাংলাদেশে প্রবেশ বন্দর চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়া আসা পর্যন্ত এক বা একাধিক কর্মকর্তা নিয়োগ থাকবে।

এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, পণ্য পরিবহনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে মাশুল নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। পণ্যগুলো আখাউড়া স্থলবন্দরে আসার আগে চট্টগ্রাম বন্দরেই মাশুল আদায়ের বিষয়গুলো সম্পাদিত হয় বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে আসাম ও ত্রিপুরায় যাচ্ছে ভারতীয় পণ্য

পূর্ববর্তি সংবাদপঞ্চগড়ে নসিমনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
পরবর্তি সংবাদআয়া সোফিয়া নিয়ে আল জাজিরার টকশোতে তুর্কি সাংবাদিকের ঐতিহাসিক বক্তব্য