আর কত পদ দিলে সংখ্যালঘুরা ভাল থাকবেন?

সাদ উদ্দীন সাদী।।

দেশের প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ প্রাপ্তি তো অনেক দূরের কথা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অস্তিত্ব সংকটে আছে মুসলমানরা। এনআরসি, সিএএ ইত্যাদি নানা কালা কানুন তৈরি করা হচ্ছে মুসলমানদেরকে একঘরে করার জন্যে। আরেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে গণহত্যার শিকার হয়ে লাখ লাখ সংঘালঘু মুসলিমরা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। আশপাশের দেশগুলোতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের তুলনায় ঢের সুখে আছেন আমাদের দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সরকারের এমন কোনো পদ নেই যেখানে সংখ্যালঘুদের প্রাবল্য দেখা যায় না। হাসপাতাল বলুন বিচারালয় বলুন প্রশাসন বলুন সর্বত্রই তাদের প্রভাবক উপস্থিতি। এরপরও তাদের বক্তব্য- তারা ভাল নেই। তাহলে কী দিলে তারা ভাল থাকবেন।

আমেরিকায় ট্রাম্পের কাছে নালিশ দিয়ে এসেছিলেন প্রিয়া সাহা। প্রিয়া সাহার গোড়া এত মজবুত যে তাকে জবাবদিহি করার সাহস কারো হয়নি। এবার প্রিয়া সাহার সুরে একই অভিযোগ করলেন আরেক হিন্দু নেতা। ঢাকার প্রভাবশালী একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব অভিযোগ করেছেন ওই নেতা।

এক সময় প্রশাসনে সংখ্যালঘুদের অতিরিক্ত উপস্থিতির অভিযোগকে মৌলবাদী অভিযোগ বলে উড়িয়ে দেওয়া হত। কিন্তু এবার ঢাকার সেই পত্রিকাটি অভিযোগ তুলে ওই হিন্দু নেতার কাছে জানতে চেয়েছেন, আওয়ামী লীগ আমলে প্রশাসনে সংখ্যালঘুরা অনেক ক্ষেত্রে অন্যায্য সুবিধা পাচ্ছে- এর জবাব কী?

এই অভিযোগ এখন দিবালোকের ন্যায় এত স্পষ্ট যে ওই হিন্দু নেতাও স্বীকার করে নিলেন। তবে তিনি কারণ দেখিয়েছেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে সংখ্যালঘুরা প্রশাসনে বেশী নিয়োগ পাচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে তো ওসি প্রদীপ, পিকে হালদার, এবং অতি সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের উত্তম কুমার বড়ুয়া, ডা. সৌমিত্র সরকার, ডা. রতন দাসরা দেখিয়ে দিয়েছেন সংখ্যালঘুরা কেমন সৎ ও যোগ্য হতে পারেন।

ভারতে মোদি সরকারের নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থানকে দুর্বল করেছে ওই হিন্দু নেতাকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দিলেন, দুই দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও রাজনীতিবিদদের উপমহাদেশের সার্বিক স্বার্থে তা গভীরভাবে ভেবে দেখার সময় এসেছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থান দুর্বল হলে ভারতে সংখ্যালঘুদের অবস্থান সবল থাকবে, এটা ভাবার কারণ নেই।

ওই হিন্দুনেতার বক্তব্য থেকে পরিস্কার বোঝা যায়, ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদী শক্তির সাথে বাংলাদেশের উগ্রহিন্দুদের গভীর যোগ সূত্র রয়েছে। নয়তো সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়েই যদি কথা বলেন তবে পাশের দেশের সংখ্যালঘুদের বেলায় তারা চুপ কেন? হিন্দু হলেই কি সংখ্যালঘু? মুসলমানরা কি সংখ্যালঘু হয় না? ভারতে মিয়ানমারে মুসলিম সংখ্যালঘুরা কি তাদের অধিকার পাচ্ছে?  ভারতের সংখ্যালঘুদের অধিকার বঞ্চিত হওয়ার উপর দু:খ প্রকাশের পরিবর্তে কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়ে ওই আইনজীবী বললেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থান দুর্বল হলে ভারতে সংখ্যালঘুদের অবস্থান সবল থাকবে, এটা ভাবার কারণ নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এধরণের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে কেউ যেন ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে না পারে সে জন্য সচেতন থাকাই এখন সময়ের দাবি।

পূর্ববর্তি সংবাদবিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সুর নরম করতে বাধ্য হলেন ম্যাক্রো
পরবর্তি সংবাদবিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করায় ৭৯১ যাত্রীর জরিমানা