রাজাধানীতে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ ৭০ মামলার আসামি আ.লীগ নেতা গ্রেফতার

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অস্ত্র ও বার্মিজ ইয়াবাসহ আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান ওরফে মনিরকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২।

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকার ১/২ পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মনিরের বিরুদ্ধে দখল, অস্ত্রবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে প্রায় ৭০টি মামলা রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-২ এর কর্মকর্তা মো. মামুন।

তিনি বলেন, ‘মনিরের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক ও বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ঢাকা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ আশেপাশে দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তার লাইসেন্স করা অস্ত্র থাকলেও সেটি দিয়েই অপকর্ম করতো।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তার নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়ে সত্যতা পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মনিরের সঙ্গে আর কারা জড়িত রয়েছে সেসব বিষয়ে র‍্যাবের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে র‌্যাব সূত্র বলছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে লাগেজ ভর্তি ডলার নিয়ে সপরিবারে রাতারাতি আমেরিকায় পালিয়ে যায় মনির। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত কোরবানির ঈদে দেশে ফিরেই তিনি ঢাকা উদ্যান, নবীনগর হাউজিং ও চন্দ্রিমা উদ্যানে দখলবাণিজ্য শুরু করেন। গত তিন মাসে জাল কাগজপত্র বানিয়ে শুধু ঢাকা উদ্যানেরই চারটি প্লট দখল করেছেন মনির। মনিরের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র মোহাম্মদপুর থানা ও আদালতে চাঁদাবাজি, জবরদখল, মাদক, অস্ত্র, নারী নির্যাতন, চুরিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অর্ধশতাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে।

বাংলাদেশ বিমানের জুনিয়ার পার্সার কাজী আশরাফ আল কাদের ও তার স্ত্রী ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা খাদিজা আক্তারের প্লট দখল করে নেয় মনির। আরেক ভুক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মোস্তফা নাজিম, ঢাকা উদ্যানের সি-ব্লকে ১ নম্বর সড়কের একটি প্লটে চলতি বছরে বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে মনির তার কাছে চাঁদা দাবি করে।

মনিরের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা ও লুটপাটের শিকার হন মোহাম্মদপুরের বছিলা রোডের আজহার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বরকত উল্লাহ।

প্রায় দেড় দশক আগে মোহাম্মদপুর এলাকার বিএনপির ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাঈদ ব্যাপারীর হাত ধরে দখলবাণিজ্যে মনিরের হাতেখড়ি। স্থানীয় কয়েক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাকে হাত করে চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য চালাতেন তিনি।

এ ছাড়াও ইয়াবা কারবারে জড়িত মনির। এক সময়ে মোহাম্মদ থানায় কর্মরত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আতিক তার হয়ে কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান ঢাকায় নিয়ে আসতেন। মাস দুয়েক আগে আতিক চালানসহ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

আতিকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে আরেক সদস্য মনিরের ঘনিষ্ট সহযোগী হুমায়নকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও গডফাদার মনিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। অবশেষে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়লেন মনির।

পূর্ববর্তি সংবাদবাইডেন এগিয়ে, জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ট্রাম্পের আদালতে মামলা
পরবর্তি সংবাদদক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগের পরিবেশ বাংলাদেশে: অর্থমন্ত্রী