এসআই আকবরকে পালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন সিনিয়র কর্মকর্তা!

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: রায়হান আহমদ হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ভারতে পালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন এক সিনিয়র কর্মকর্তা কর্মকর্তা।

সোমবার সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকার খাসিয়াদের কাছে আটকের পর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা বলেন তিনি।

আকবরের দাবি, ‘সিনিয়র অফিসাররা আমাকে জানায়, যেহেতু সাসপেনশন (সাময়িক বরখাস্ত) হয়ে গেছ, আপাতত তুমি কোথাও চলে যাও। দুই মাস পর সব কিছু ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পরিস্থিতি হ্যান্ডল করা যাবে’।

এসআই আকবরকে জিজ্ঞাসাবাদের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, আকবর হোসেনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাকে স্থানীয়রা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এসময় আকবর বলছিলেন তিনি রায়হান হত্যার সঙ্গে একা জড়িত নন।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে আকবর বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করে একা মারিনি। তাকে মারছিলো ৫-৬ জন। এজন্য মরে গেছে ভাই।’

স্থানীয় একজনের জিজ্ঞাসাবাদে আকবর বলেন, ‘সে (রায়হান) ছিনতাই করেছিলো। টাকা ছিনতাই।’

এসময় স্থানীয় অপর একজন বলেন, ‘আর তার জান তোমরা ছিনতাই করেছ?’

উত্তরে আকবর বলেন, ‘ভাই, আমরা জান নেইনি, বরং আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়েছি। পাবলিক মারছিলো, আমারা হাসপাতালে নিয়েছি। ওইখানে সে মারা গিয়েছিলো।’

তাহলে কেন পালাচ্ছিলেন এর উত্তরে এসআই আকবর বলেন, ‘আমি ভাইগা আসছি এ জন্য যে, আমাকে বলছে যে, সাসপেন্ড করা হয়েছে। অ্যারেস্ট করা হতে পারে। দুই মাস পর ঠাণ্ডা হলে এইটা আবার হ্যান্ডেল করা যাবে। আমি অন্য কোনো কারণে ভাগি নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে এক সিনিয়র অফিসার বলেছিলো, তুমি আপাতত চলে যাও, কয়দিন পরে আইসো। এটা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।’

ভারতে কেন পালিয়ে যাচ্ছিলেন- এর উত্তরে আকবর বলেন, ‘ইন্ডিয়ার এক পরিবার আমাকে বলেছিলো যে তুমি মাঝেরগাও থাকো।’

 

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আকবরকে জেলা পুলিশ গ্রেফতার করে। পালিয়ে থাকার ২৮ দিনের মাথায় গ্রেফতার হন। তাকে সিলেট পুলিশের জেলা কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ১০ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় রায়হানকে। এরপর ১১ অক্টোবর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হানের মৃত্যু হয়।

আকবর ১৩ অক্টোবর থেকে পলাতক ছিলেন। রায়হান হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এএসআই আশেক এলাহীকে ৫ দিনের এবং কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদকে দুই দফায় ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই।

রায়হান নগরীর একটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে চাকরি করতেন। তিনি স্ত্রী, আড়াই মাস বয়সী এক মেয়ে ও মাসহ আখালিয়ার নিহারিপাড়ায় বসবাস করতেন। পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর ঘটনায় “বৃহত্তর আখালিয়া সংগ্রাম পরিষদ” নামে এলাকাবাসীর সম্মিলিত মোর্চা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে তৎপর। এসআই আকবরসহ জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চলছে।

এস এন

পূর্ববর্তি সংবাদযুদ্ধবন্ধের চুক্তির ঘোষণা দেওয়ায় পার্লামেন্টে ঢুকে আর্মেনিয় স্পিকারকে গণপিটুনি (ভিডিও)
পরবর্তি সংবাদনীতিমালা অমান্যকারী গ্রুপগুলোকে ‘নজরদারিতে’ রাখবে ফেসবুক