তালিবুল ইলমদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

মুফতি ইয়াহইয়া ।।

আল্লাহ তায়ালার শোকর যে, আল্লাহ আমাদেরকে ইলমের দৌলত দান করেছেন। আল্লাহর কাছে প্রিয় হল ইলম। এজন্য নবীরাসুলদেরকে আল্লাহ ইলম দান করেছেন।আর আমাদেরকে তাদের ওয়ারিস বানিয়েছেন।প্রিয় ছাত্র ভায়েরা, বর্তমানে আমাদের সামনে নানান ফেতনাফ্যাসাদ। নতুন নতুন মতবাদ। আজ আমরা এর মোকাবেলা করছি।কাল তোমাদেরকেও মুকাবেলা করতে হবে। জন্য তোমাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।প্রস্তুতির জন্য তোমাদের দুটি কাজ করতে হবে। ১.যোগ্যতা  . গ্রহনযোগ্যতা। এদুটি গুণ অর্জন করতে হবে। শুধু যোগ্যতা আছে গ্রহনযোগ্যতা নেই তাহলে কাজ পূর্ণ হবে না। আবার গ্রহনযোগ্যতা আছে যোগ্যতা নেই তবুও কাজ শূন্য থাকবে।

কীভাবে এদুটি গুণ অর্জন করব?

.যোগ্যতার জন্য তিনটি কাজ করতে হবে। .استخلاص  .انهماق .استقامت অর্থাৎ নিজেকে সব কিছু থেকে খালি করে,ইলমের ভেতর দীর্ঘ সময় ডুবে থাকতে হবে ইস্তিকামাত বা দার্ঘ সময় না হলে যোগ্যতা হবে না। তবে শর্ত হল যোগ্য মুশফিক কোন তালিমি মুরুব্বির অধীনে থেকে কাজ করতে হবে।

. গ্রহনযোগ্যতার জন্য বিনয়ী হতে হবে। যে যতো বেশি বিনয়ী হবে আল্লাহ তাকে ততো বেশি গ্রহনযোগ্যতা দান করবেন। আর বর্তমানে গ্রহনযোগ্যতার প্রয়োজন অনেক বেশি। হযরত ওমর রা. একদিন মিম্বারে দাড়িয়ে বললেন, হে লোক সকল তোমরা বিনয়ী হও। আমি রাসুল .কে বলতে শুনেছি যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভেল জন্য বিনয়ী হয়,আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। সে নিজেকে ছোট মনে করে, কিন্তু মানুষের চোখে খুবই মহান সম্মানিত হয়। আর যে ব্যক্তি অহংকার করে, আল্লাহ তাকে হেয় করে দেন। সে নিজেকে বড় মনে করে। কিন্তু মানুষের দৃষ্টিতে সে ছোট। এমনকি সে শেষ পর্যন্ত মানুষের চোখে কুকুর শূকরের চেয়েও অধিক ঘৃণিত বলে বিবেচিত হয়। মেশকাত শরীফ হা.৫১১৯ .ফা। হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, যে বিনয়ী হয় আল্লাহ তাকে মানুষের মাঝে গ্রহনযোগ্যতা দান করেন।

মুসা হারুন .কে ইংগিত করে আল্লাহ বলছেনআর তোমরা তাকে নরম কথা বলো, হয়ত সে চিন্তাভাবনা করবে অথবা ভীত হবে সুরা ত্বহা৪৭। অর্থাৎ নবীদ্বয়কে আল্লাহ বিনয়ের সাথে ফিরআউনকে দাওয়াত দিতে নির্দেশ করছেন। কোরআনে অন্য স্থানে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করছেনআল্লাহর রহমতে আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন। পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ কঠিন হৃদয়ের হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। সুরা আলু ইমরান১৫৯। আয়াতটি ওহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের প্রাথমিক পরাজয়ের পর অবতীর্ণ হয়েছে। এখানেও আল্লাহ তায়ালা প্রিয় রাসুল সা.কে সাহাবাদের সাথে বিনয়ী আচরনের উপদেশ দিয়েছেল।এর সাথে বিনয়ী হওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে হবে। الّهم فقّهنا في الدين وحببّنا الي الناس  (হে আল্লাহ আপনি আমাদের দ্বীনের ফিকহ দান করুন এবং মানুষের কাছে প্রিয় করুন) হযরত ওমর বিন আব্দুল আযিয রহ. এই দোয়া করতেন। দোয়াটিও করতে হবে اللهم اجعلني في عيني صغيرا وفي اعين الناس كبيرا( হে আল্লাহ আপনি আমাকে আমার দৃষ্টিতে ছোট মানুষের দৃষ্টিতে বড় বানিয়ে দিন) আল্লাহ তায়ায়া আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করেন।আমিন।

(যশোর মাসনা মাদরাসার মুহতামিম, মুফতি ইয়াহইয়া সাহেব দা.বা. জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম বুজরুকগড়গড়ী চুয়াডাঙ্গা, মাদরাসার ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বয়ান থেকে সংকলন। মুহাম্মদ হাসান মুরাদ।) ইজে

পূর্ববর্তি সংবাদদামেস্কের কাছে বিমান হামলা চালাল ইসরাইল
পরবর্তি সংবাদনীতিমালা প্রণীত হলেও নানাভাবে নির্যাতনের শিকার গৃহশ্রমিকরা