রিজওয়ানুল কবির।।
পঞ্চগড় গিয়েছিলাম। সেখানে কাদিয়ানি মতবাদের লোকজনের সংখ্যা অনেক। আছে খৃষ্টান মিশনারীও। এলাকার পর এলাকা গোপনে কাদিয়ানী বা খৃষ্টান হয়ে গিয়েছে। ভাই জানে না তার আরেক ভাই খৃষ্টান। সন্তান জানে না তার বাবা কাদিয়ানী।
কী হৃদয়বিদারক এক পরিস্থিতি। প্রফেসর হামিদুর রহমান সাহেব, মাওলানা আবদুল মালেক সাহেব, মাওলানা আমিনুল হক সাহেবসহ অনেক আলেম গিয়েছিলেন এবার সেখানকার অবস্থা পরিদর্শনের জন্য।
সেখানে একটি ছোট মক্তব করা হল। বাচ্চাদের আলিফ বা তা সা পড়ানোর। অনেকের কাছে মনে হচ্ছিল,তাদের এত শত অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ছোট একটি মক্তব কী কাজে আসবে?
প্রফেসর সাহেবের সাদাসিদে উত্তর, ঘরভর্তি অন্ধকার দূর করার জন্য ছোট একটি মোমবাতির আলোই যথেষ্ট। শুরুটা হোক কুরআনের তালীমের মাধ্যমেই।
আশেপাশের লোকজন প্রফেসর সাহেবকে বললেন, এলাকাটিতে গরীব লোকজনের বসবাস। আমরা কিছু শীতের কাপড় দিতে চাই।
তিনি মানা করলেন। শীতবস্ত্র বিতরনের কাজ তোমরা আলাদা ভাবে করো। অন্য কোন দিন। মক্তব উদ্বোধনের দিন নয়। আমরা মানুষকে দুনিয়াবী লোভ দেখিয়ে দ্বীনের পথে আনতে চাই না।
৮০ বছরের বৃদ্ধ মানুষ। দুজনের ভর ছাড়া একটি কদম পর্যন্ত দিতে পারেন না। পার্কিনসনের রোগী। কথা বলতে গিয়ে জড়িয়ে যায়। কিন্তু মক্তবের বাচ্চাদের তিনি পড়ালেন স্বাভাবিক ভাবে। একদম স্পষ্ট আওয়াজে। পড়ানোর ভঙ্গিও কী অদ্ভুত মিষ্টি-
তিনি প্রশ্ন করেন, বলো তো আল্লাহ কে?
ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা চিৎকার করে বলে উঠে, আল্লাহই তো আমাদের বানিয়েছেন।
তিনি আবার প্রশ্ন করেন-
এই আকাশ কে বানিয়েছে?
এই সূর্য কে বানিয়েছে?
আমাদের আব্বু আম্মুকে কে বানিয়েছে?
প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে বাচ্চারা চিৎকার করে বলে- আল্লাহ।
প্রশ্ন এবং উত্তর তো জানা বহু আগেই। তারপরও মনে হচ্ছিল যেন নতুন করে শিখলাম। –
আল্লাহ! সমস্ত বিশ্বজগতের প্রতিপালক। আমার মহান রব। তিনি যদি আমাকে মেহেরবানী করে তাঁর সাথে পরিচয় না করাতেন, আমি তো কখনই পেতাম না তাঁর পরিচয়।
নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা তাঁরই জন্য। সর্বাবস্থায়, সর্বক্ষেত্রে।
লেখকের ফেসবুক পোস্ট থেকে
-এনটি
