ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দিতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘কড়াকড়ির’ অভিযোগ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বাংলাদেশে ওয়াজ বা ধর্মীয় সমাবেশের বক্তাদের বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ করেছে, এবার শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের ওয়াজ মাহফিল করার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন কড়াকড়ি আরোপ করছে।

তারা আরও বলেছেন, অনেক জায়গায় ওয়াজ করার অনুমতিও দেয়া হচ্ছে না।

ওয়াজ মাহফিলে বক্তাদের কয়েকটি সমিতি বা সংগঠন রয়েছে। একটি সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা হাসান জামিল জানিয়েছেন, গত মাসে দেশের আটটি জায়গায় অনুমতি না পাওয়ায় তার ওয়াজ মাহফিল করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আবার ঐ আটটি এলাকার বাইরে অন্য এলাকায় অনুমতি পেয়ে তিনি মাহফিলে বক্তব্য রেখেছেন।

তিনি বলেছেন, “কোথাও কোথাও কোন বিশেষ ব্যক্তির কারণে ওয়াজ করতে দেয়া হচ্ছে না। কোথাও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ অথবা কোথাও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপের কারণে প্রোগ্রাম করতে দেয়া হচ্ছে না। নানান জায়গা থেকে এরকম অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে। “

“বিশেষ করে বড় প্রোগ্রাম যেগুলো জেলা পর্যায়ে হয় বা বড় জমায়েত হয়, অধিকাংশ জায়গায় এমন প্রোগ্রাম করতে দেয়া হচ্ছে না” বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মাওলানা হাসান জামিল জানিয়েছেন, অনুমতি না দেয়ার ক্ষেত্রে স্পষ্ট কারণ বলা হয় না।

মাহফিলে বক্তাদের আরও দু’জন অভিযোগ করেছেন, ওয়াজ মাহফিল করার সময় তাদের গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নজরদারিতেও রাখা হয়।

এদিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান বলেছেন, ওয়াজ মাহফিলের ওপর কোন বিধিনিষেধ নেই। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বড় জমায়েত না করে সীমিত পরিসরে ওয়াজ মাহফিল করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও কর্মকর্তারা বলেছেন, ওয়াজ বা ধর্মীয় সমাবেশে কিছু বক্তা ‘বিতর্কিত’ বা  ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য’ দিয়ে থাকেন। এমন বক্তাদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।

শীতের সময়েই দেশের মহানগরী, জেলা-উপজেলা এবং একেবারে গ্রাম পর্যায়ে ওয়াজ মাহফিল বা ধর্মীয় সমাবেশ হয়ে থাকে।

ওয়াজ মাহফিলের বক্তাদের বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ তুলেছে, এবার তাদের ওয়াজ করার অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে বক্তাদের তালিকা দিতে হচ্ছে।

তারা বলেছেন, তালিকার কোন বক্তার কোন রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা, এছাড়া ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমে এবং অন্য কোন এলাকায় আগে বিতর্কিত বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন কিনা – এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখার পর সীমিত পরিসরে জমায়েতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

তারা আরও অভিযোগ করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে অনুমতি মিলছে না।

মাহফিলে বক্তাদের মধ্যে অন্যতম একজন মাওলানা হাবিবুল্লাহ কাসেমী বলেছেন, বিতর্কিত বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বক্তারা সতর্ক থাকেন বলে তিনি মনে করেন।

“যারা দায়িত্বশীল বা ভাল আলোচক আছেন এবং শীর্ষ আলোচক যারা আছেন, তারা অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বাক্য এবং শব্দ চয়ন করে থাকেন। তাদের আলোচনাগুলো গঠনমূলক হয়ে থাকে। তবে কোন কারণে যদি কোন ব্যক্তির ব্যাপারে বিতর্কিত বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ আসে, সেটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা” বলে তিনি মনে করেন।

বিবিসি

পূর্ববর্তি সংবাদট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা কামরা চেয়ে রিট
পরবর্তি সংবাদভারতে রামমন্দিরের চাঁদা সংগ্রহ করতে মুসলমানদের বাড়িঘর লুট