ইতিহাসের পাতা থেকে: টুকরো টুকরো জ্ঞানের কথা

আমীর ইলয়াস ।।

জ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতা

সুলতান মাহমূদের দরবারে এমন অনেক ‘নুজূমী’ পন্ডিত ছিল, যাদের তুলনা সারা সাম্রাজ্যে ছিল না, কিন্তু সুলতান তাদের কাছে কখনো কিছু জিজ্ঞাসা করতেন না। এক দরবারী একদিন জিজ্ঞাসা করল, হুজুরের দরবারে এত নুজূমী পন্ডিত, কিন্তু হুজুর কখনো তাদের কাছে কিছু জানতে চান না। তাহলে এদের থাকায় লাভ কী?

সুলতান বললেন, এদেরকে শুধু এজন্য রাখা হয়েছে যে, দেশে সব বিষয়েরই পন্ডিত থাকা দরকার। যেন কখনো প্রয়োজন হলে অসুবিধায় পড়তে না হয়। তবে তাদের কাছে কোনো কিছু জানতে না চাওয়ার কারণ হল, আমার সকল কাজের ভিত্তি দুইটি : ১. আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা। ২. শরীয়তের ফতোয়া ও জ্ঞানী সুহৃদদের পরামর্শ। (জাওয়ামিউল হিকায়াত)

 

প্র জা পা ল ন

সুলতান মাহমূদ সুশ্রী ছিলেন না। একদিন তিনি খাস কামরায় নামায পড়ছিলেন। দুইজন খাদিম তার নিকটে আয়না ও চিরুনী রেখে গেল। ইতিমধ্যে উযীর আহমদ হাসান কামরায় প্রবেশ করলেন এবং অভিবাদন জানালেন। সুলতান নামায শেষে কাবা পরিধান করলেন এবং মাথায় মুকুট পড়লেন। এরপর আয়নায় চেহারা দেখে মুচকি হাসলেন। উযীর সামনে উপস্থিত ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বলতে পারেন, এখন আমি কী ভাবছি? উযীর বললেন, বাদশাহ নামদার! আপনিই বলুন। সুলতান বললেন, আমার আশঙ্কা হয় যে, লোকেরা আমাকে ভালবাসবে না। কেননা মানুষ এমন বাদশাহকেই ভালবাসে যার চেহারাও সুন্দর হয়!

আহমদ হাসান বললেন, বাদশাহ নামদার! কেবল একটি কাজের মাধ্যমেই আপনি প্রজাদের ভালবাসা পেতে পারেন, এমনকি আগুন ও পানির উপরও আপনার ফরমান চলতে পারে। সুলতান জিজ্ঞাসা করলেন, কী সেই কাজ? উযীর বললেন, ‘অর্থকে শত্রু মনে করুন, সকল প্রজা আপনার বন্ধু হয়ে যাবে।’ কথাটা সুলতানের খুবই মনঃপুত হল এবং প্রজা সাধারণের জন্য বখশিশের হাত উন্মুক্ত করে দিলেন। অল্প দিনেই সাম্রাজ্যের চারদিকে সুলতানের সুনাম ছড়িয়ে পড়ল। (সিয়াসতনামা)

 

ন্যা য় বি চা র

সুলতান গিয়াসুদ্দীন বুলবনের আমলে বাদায়ূনের এক প্রশাসক অত্যন্ত শান-শওকতের সঙ্গে থাকত। সব সময় চার হাজার অশ্বারোহী তার হুকুম তামিলে প্রস্ত্তত থাকত। একদিন এক নওকরের উপর ক্রদ্ধ হয়ে এত চাবুক মারল যে, সে মৃত্যুবরণ করল। কিছু দিন পর সুলতান গিয়াসুদ্দীন শাহী পরিদর্শনে বাদায়ূন পৌঁছলে ওই নওকরের বিধবা স্ত্রী সুলতানের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন। সুলতান গোটা বিষয়টা শোনার পর আদেশ দিলেন, ওই প্রশাসককেও এতগুলো চাবুক মারা হোক, যতগুলো সে ওই নওকরকে মেরেছিল। শাহী হুকুম তামিল করা হল।

শাস্তি সহ্য করতে না পেরে ওই প্রশাসকও মারা গেল। সুলতানের আদেশে তার লাশ শহরের ফটকে ঝুলিয়ে দেওয়া হল যেন জালেম শাসকরা ভবিষ্যতে জুলুম করার সাহস না পায়। (তারীখে ফেরেশতা )

ইজে

পূর্ববর্তি সংবাদমোদির সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান, জবাবে মমতার মুখে ‘জয় বাংলা’
পরবর্তি সংবাদকোস্ট গার্ডকে বিদেশি জাহাজে গুলি করার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিল চীন