গবেষণা প্রতিবেদন: করোনা থেকে সুরক্ষায় কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ জরুরি

Cholesterol plaque in artery

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলে মনে করছেন এক দল গবেষক।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এমন ওষুধ গ্রহণকারী কেউ যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তবে তিনি অন্যদের তুলনায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক চিকিত্সা গবেষণা সংস্থা হাওয়ার্ড হিউস মেডিকেল ইনস্টিটউটের গবেষক ক্লিফোর্ড ব্র্যাংউইনের এক ল্যাব রিপোর্টে বলা হয়েছে, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি কোলেস্টেরলের মাধ্যমেই কোষের ভেতরে ঢুকে শরীরকে আক্রান্ত করে।

গবেষকরা বলছেন, ভাইরাসটি কোষের প্রতিরক্ষামূলক ঝিল্লি অতিক্রম করতে মেদযুক্ত অণুর ওপর নির্ভর করে।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষণা দলটি জানায়, কোলেস্টেরল ছাড়া ভাইরাস কোষের প্রতিরক্ষামূলক ঝিল্লি পেরিয়ে শরীরকে সংক্রমণ করতে পারে না।

প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা এই গবেষণাটি নিয়ে এখনো বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা হয়নি। এটি নিয়ে এখনো বিস্তৃত গবেষণা চলছে।

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োফিজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ক্লিফোর্ড ব্র্যাংউইন বলেন ‘কোলেস্টেরল হলো ঝিল্লির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কোষ ও ভাইরাস একে ঘিরে থাকে। এখানে সহজেই বোঝা যায় যে, সার্স-কোভ-২ সংক্রমণের জন্য কোলেস্টেরলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরও জানান, করোনায় আক্রান্তরা স্ট্যাটিন হিসেবে পরিচিত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এমন ওষুধ খেলে দ্রুত সেরে ওঠেন।

হাওয়ার্ড হিউস মেডিকেল ইনস্টিটউটের ওই গবেষণা এবং এর আগে প্রকাশিত আরেকটি নিবন্ধে গবেষকরা বলছেন, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এমন ওষুধ সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটিকে কোলেস্টেরলের মাধ্যমে কোষের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।

ব্র্যাংউইন জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের ভূমিকা থেকে বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯’র চিকিত্সার ক্ষেত্রে একটি উপায় খুঁজে পেতে পারেন।

গবেষণাটিতে কোভিড-১৯ রোগের একটি অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। এতে কোভিড-১৯ রোগীদের ফুসফুসে পাওয়া দৈত্যাকার, যৌগিক কোষগুলোর গঠন নিয়ে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত উঠে এসেছে।

করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, শ্বাসনালী থেকে শুরু করে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে, এমন প্রমাণ আগেই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

শুরুতে এটি গলা, শ্বাসনালী ও ফুসফুসের কোষে আক্রমণ করে এবং সেখান থেকে পরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে এবং আরও কোষকে আক্রান্ত করতে থাকে। মস্তিস্ক, স্নায়ু, কিডনি এমনকি ত্বককেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।

বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘসময় ধরে বলে আসছেন যে, হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা এবং হৃদযন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্তদেরই এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।

এ ছাড়াও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হৃদরোগের সবচেয়ে বড় ঝুঁকিপূর্ণ দিক হলো অস্বাস্থ্যকর মাত্রার কোলেস্টেরল। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

-এসএন

পূর্ববর্তি সংবাদচিঠিতে বিষ দিয়ে তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রপতিকে হত্যাচেষ্টা, সন্দেহের চোখে ইসরাইল
পরবর্তি সংবাদকোলের শিশুকে ব্রিজ থেকে পানিতে ফেলে দিল মা!