মিয়ানমার: ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যেও রাস্তায় অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনীর গ্রেফতারি অভিযানের মধ্যেই মিয়ানমারে প্রতিবাদী জনতার বিক্ষোভ এখনো অব্যাহত রয়েছে।

রোববার দেশটির বিভিন্ন শহরের সড়কে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে সাদা পোশাক পরে বিক্ষোভকারীরা প্রধান প্রধান সড়কে মিছিল বের করে। এসময় তারা সামরিক শাসন প্রত্যাহার এবং অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিযুক্ত প্ল্যাকার্ড বহন করে।

এসময় বাস ও অন্য বাহনের চালকরা ধীরগতিতে তাদের বাহন চালান এবং হর্ন বাজিয়ে বিক্ষোভের সাথে তাদের সংগতি জানান।

রাজধানী নেপিডোতে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে সড়কে মোটরসাইকেল ও গাড়ির একটি বহর বের করা হয়।

দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় শহর দাওয়েইতে কড়া রোদে মিছিল করা বিক্ষোভকারীদের উৎসাহ দেয়ার জন্য স্থানীয় বাদকদল ড্রাম বাজিয়ে শোনায়। মিয়ানমার নাও ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, অন্তত ছয় পুলিশ সদস্য বিক্ষোভের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে। খবর আলজাজিরার।

অন্যদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় মিনগিয়ান শহরে বিপুল বিক্ষোভকারী রাস্তায় মিছিল বের করে। এসময় তারা অং সান সু চির মুক্তি দাবি এবং রাষ্ট্রীয় এমআরটিভি ও এমডব্লিউডি টেলিভিশনের ‘প্রোপাগান্ডা’ প্রত্যাখ্যানের প্ল্যাকার্ড বহন করে।

উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন প্রদেশে ইরাবতি নদী তীরে ওয়াইমাও শহরে জাতীয় পতাকা বহন করে ও বিপ্লবী গান গেয়ে প্রতিবাদে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৮৪ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণকারী দল অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনারস জানিয়েছে, বেশিরভাগকেই রাতে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার ইয়াঙ্গুনের সড়কে বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ‘মানুষকে রাতে অপহরণ বন্ধ করো’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে।

শনিবার রাতে ইয়াঙ্গুন ও মান্দালায়ের রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের টহল দিতে দেখা যায়। এর আগে শুক্রবার মিয়ানমারের সরকারের ২৩ হাজার বন্দীকে মুক্তি দেয়ার পর অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষোভকারীরা টহল দেন। তারা অভিযোগ করেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকার এই অপরাধীদের মাধ্যমে দেশটিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে সহিংসতা বিস্তার করতে চায়।

১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

-এসএন

পূর্ববর্তি সংবাদসেতুমন্ত্রী বললেন: ‘আ.লীগ ষড়যন্ত্র করে না বরং বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়’
পরবর্তি সংবাদধাওয়া করতে গিয়ে মাদকবাহী ট্রাকচাপায় র‌্যাব সদস্যের মৃত্যু