গোরস্থানের মানুষেরা

আতাউর রহমান খসরু ।।  

গত শুক্রবারের কথা। সদ্যপ্রয়াত আলেম-লেখক মুহাম্মদ রাশিদুল হকের লাশ দাফনের জন্য গিয়েছিলাম মিরপুর কালশী কবরস্থানে। আমরা যখন রাশিদুল হকের লাশ নিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করছি তখন খোড়া হচ্ছে আরও তিনটি কবর। আমাদের কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেখানে প্রবেশ করলো দুটি লাশ। তাদের একজন বৃদ্ধ এবং একজন শিশু।

শিশুর লাশটি কোলে করে নিয়ে এসেছিলেন তার দাদা। পেছনে বিলাপ করছিলেন শিশুর পিতা। শিশুর পরিবারের এক সদস্যের কাছে জানতে পারলাম বিয়ের দশ বছর পর এ সন্তানটি লাভ করেছিলেন আশেকুল্লাহ দম্পতি। কিন্তু এক বছর পূর্ণ না হতেই নিউমোনিয়ায় মারা যায় শিশুটি।

অলস সময় কাটাচ্ছে …

আজ মঙ্গলবার রাশিদ ভাইয়ের কবর জিয়ারত করতে গেলাম। কিন্তু আজকের পরিবেশটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। শূন্য পড়ে আছে পুরো কবরস্থান। গোরখোদকরা কবরের দেয়ালের উপর বসে অলস সময় পার করছে। অথচ শুক্রবার মানুষে গমগম করছিল কবরস্থান।

জিয়ারত শেষে গোরখোদকদের সাথে কথা হলো। তারা জানালেন কালশী কবরস্থানের অজানা অনেক কথা।

গেটের পাশে একটি কবরের দেয়ালের উপর বসেছিলেন চারজন গোরখোদক। তাদের মধ্যে ইয়াসিনই সবচেয়ে পুরাতন। তিনি কবরস্থানে কাজ করছেন প্রায় সাত বছর। ইয়াসিনের দাবি, তিনি অন্তত ৬ হাজার লাশ দাফন করেছেন।

ইয়াসিনের দাবি সাইনবোর্ডে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠার সনটা ভুল। ১৮৫৫ জায়গায় ১৮৮৫ লেখা হয়েছে।

ইয়াসিন জানালেন, এই কবরস্থানটি ১৮৫৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন মরহুম হজরত আলী মুন্সি। তিনি ছিলেন মিরপুরের একজন প্রভাবশালী ও মান্যবর ব্যক্তি। সর্বসাধারণের জন্য তিনি কবরস্থানটি উন্মুক্ত করে দিলেও তা ওয়াকফ করে যাননি। ফলে কবরস্থানটি এখনও ব্যক্তি মালিকানাধীন। যা দুই ভাগে ভাগ করে পরিচালনা করা হয়। এক অংশের পরিচালনায় রয়েছেন সাবেক কমিশনার আবদুল মালেক এবং অপরাংশের পরিচালনায় রয়েছে মিরপুরের মাতবর পরিবার।

ইয়াসিনের দাবি ৬ হাজার লাশ দাফন করেছে সে।

ইয়াসিনসহ এখানে কাজ করেন ১৩ জন শ্রমিক। তাদের নির্ধারিত কোনো বেতন নেই। দাফনের কাজে মৃতের আত্মীয়রা যা দেন তা দিয়েই সংসার চলে তাদের। এর বাইরে কবর পরিচর্যার কাজ করেও কিছু অর্থ আসে। দাফনের কাজ থেকে তাদের আয়ের কোনো নিশ্চয়তা নেই। কখনও দিনে সাত থেকে আটটা লাশ আসে। আবার কখনও এক সপ্তাহেও কোনো দাফন হয় না।

ইয়াসিনের পাশেই দাড়িয়েছিলেন রাসেল। তিনি এ কবরস্থানে কাজ করছেন ২ বছর। তার কাছে জানতে চাইলাম, কেন এ পেশায় আসলেন? উত্তরের বলেন, ‘কাজ তো কারো না কারো করতে হতো, সেটা না হয় আমিই করলাম।’

ভয় করে না বা খারাপ লাগে না কবরে লাশ নামাতে? ‘প্রথম প্রথম লাগতো এখন আর লাগে না।’ বললেন রাসেল।

শুক্রবার মুহাম্মদ রাশিদুল হকের কবর খোঁড়ার পর রাসেল …

ইয়াসিন তার সাথে সুর মিলিয়ে বললেন, ‘এতোদিন কাজ করার পরও আামার খারাপ লাগে। যখন আমার বয়সী কোনো মানুষকে কবরে রাখি তখন কলিজা কেঁপে ওঠে। আর খারাপ লাগে আত্মীয়-স্বজনের কান্না। যে মারা গেছে সে তো চলেই গেছে কিন্তু যারা আছে তারা তো মানতে পারে না।’

কবরস্থানের শ্রমিকরা জানালেন, এখানে দাফনের জন্য কোনো টাকা নির্ধারণ করা নেই। তবে যারা কাজ করেন তাদের কিছু পারিশ্রমিক দিতে হয়। নামমাত্র খরচে দাফন করা যায় বলে এখানে লাশের ভিড়ও বেশি। সংরক্ষণ না করলে একটা কবর ৮ থেকে ৯ মাসের বেশি রাখা সম্ভব হয় না।

সংরক্ষণ করার অর্থ হলো, ২০ বছরের জন্য জমি কিনে নিতে হয়। যার খরচ জমি বুঝে এক থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত। সাবেক কমিশনার আবদুল মালেকের মালিকানাধীন অংশের তত্ত্বাবধায়ক রিপন বললেন, ‘জায়গা সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় গত ৬ মাস যাবত কবর সংরক্ষণের অনুমতি দিচ্ছেন না তারা। তবে মালিকের সাথে সরাসরি কথা বললে সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

 

দুই

ইয়াসিনের সাথে কথা বলতে বলতে কবরস্থানের মাঝ বরাবর চলে এলাম। দেখলাম, একজন মহিলা একটি শিশুর কবর পরিস্কার করছেন। পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন বৃদ্ধা। বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো এখানে কবরস্থ শিশুটির নানি হন তিনি এবং কবরের সামনে বসে আছেন তাদের মা।

এখানেই পাশাপাশি শুয়ে আছে জাকির ও জাকওয়ান।

তাদের মানে? বৃদ্ধা জানালেন, ‘এখানে পাশাপাশি শুয়ে আছে তার দুই নাতি। একজনের নাম জাকির, অন্যজনের নাম জাকওয়ান। জাকির মারা যায় দুই বছর বয়সে আর জাকওয়ান মারা গেছে ষোল মাস বয়সে। জাকির-জাকওয়ান মারা যাওয়ার পর তাদের মা এখন পাগলপ্রায়। মানসিক ভারসাম্যহীন। দশ-পনের দিন দিন পর পর সন্তানের কবরে না আসলে তিনি স্থির থাকতে পারেন না। আবার কবরস্থানে আসলে ছেড়েও যেতে চান না। দীর্ঘ সময় সন্তানের কবরের পাশে বসে থাকেন তিনি। ছেলেদের সাথে কথা বলেন। বাড়ি ফিরে গিয়েও বিলাপ করে কান্না করেন।’ কথা বলতে বলতে নানির কণ্ঠও ভিজে আসে।

বৃদ্ধাকে পেছনে ফেলে আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে চোখে পড়লো বেশ কয়েকটি ছাদওয়ালা পাকা কবর। তার কোনো কোনোটিতে উড়ছে নিশান, গিলাফ চড়ানো হয়েছে কবরের উপর। ইয়াসিন জানালেন, এখানে ছোট-বড় প্রায় ১০টি মাজার রয়েছে। এর মধ্যে ওরশও করে কোনো কোনো মাজারের ভক্তরা। তখন কবরস্থানে জনসমাগম বেড়ে যায়।

কবরস্থানের ভেতরে আছে ছোট-বড় ১০টি মাজার।

ইয়াসিনের কথার সূত্র ধরেই আমি প্রশ্ন করলাম, গত শুক্রবার প্রায় প্রতিটি কবরের সামনেই দেখলাম কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে দোয়া করছে। আজ একদম শূন্য? ইয়াসিন বললেন, ‘প্রতি শুক্রবার এখানে প্রচুর মানুষ আসে কবর জিয়ারত করতে। বিশেষত আশেপাশের বিহারিরা আসে তাদের আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে। এছাড়াও শবে বরাত, শবে কদরসহ বিশেষ বিশেষ দিনে তারা কবর জিয়ারত করে।’

কবরস্থানের ঠিক মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে দানবাক্স। তার গায়ে লেখা ‘কবরবাসীর কথা চিন্তা করুন, নিজে কবরবাসী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।’ এর নিচে লেখা- কবরস্থানের হুজুর : 017 … ।

হুজুরের নাম আতিকুর রহমান।

কবরস্থানের হুজুর আবার কি জিনিস? গোরখোদক রাসেল বললেন, হুজুরের নাম আতিকুর রহমান। তিনি পাশের মসজিদের মুয়াজ্জিন। লাশ দাফনের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে যে কাগজ পূরণ করতে হয় তা তিনিই করেন। যেমন, মৃত্যুসনদ দেখে ফরম পূরণ করা ইত্যাদি। এছাড়াও মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করা, মিলাদ পড়ার কাজগুলো করেন তিনি।

হেমন্তের রোদেলা দুপুর। কবরগুলোর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ঝিরঝিরে বাতাস। শান্ত শয়ানে সবাই ঘুমিয়ে আছে মাটির নিচে। সকল কবরবাসীকে সালাম জানিয়ে ফেরার পথ ধরলাম।

 

তিন

মিরপুর কালশী কবরস্থানের চিত্রগুলো মারকাযুদ্দাওয়াহ আলইসলামিয়া, ঢাকা-এর শিক্ষক মাওলানা ফয়যুল্লাহ-এর সামনে তুলে ধরলে তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনি পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, মাইয়েতের লাশ ধোয়া ও কবর খনন করা সওয়াবের কাজ। যারা এই কাজ করবে অর্থোপার্জনের নিয়ত না করে সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যেই করবে। তথাপি যদি কেউ তাদেরকে কোনো অর্থ দেয় তবে সেটা নেয়া নাজায়েজ নয়।

হেমন্তের রোদেলা দুপুর। কবরগুলোর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ঝিরঝিরে বাতাস।

‘সাধারণভাবে কবরস্থানকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখই উচিত। শরীয়তসম্মতভাবে কবরস্থানের পরিচর্যা ভালো কাজ। এর দ্বারা সওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হলো, কবরে যেন গরু-ছাগল প্রবেশ না করে এবং কবর অপবিত্র না করে সেদিকে লক্ষ রাখা। কবরের উপর গাছ তরু-লতা বা ঘাস ইত্যাদি থাকলে তা না কাটা। কেননা এগুলোর তাসবিহাত দ্বারা মৃতের উপকার হতে পারে। অবশ্য ঘন জঙ্গল হয়ে গেলে তা পরিষ্কার করা যাবে। অনুরূপ শুকনো ঘাস, ডালপালা থাকলে তা পরিষ্কার করা যাবে।’ বলেন মাওলানা ফয়যুল্লাহ।

‘তবে পরিচর্যার নামে কবরের উপর ছাদ নির্মাণ করা, ঝালর টানানো, ফুল ও আগরবাতি ইত্যাদি দেয়া বৈধ নয়। হাদিসে এমন কাজ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। শুধু একটি কবর থেকে অন্য কবর পৃথক করার জন্য সাইডে দেয়াল নির্মাণ করা যাবে। অবশ্য তা যেন চাকচিক্যপূর্ণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। আর মৃতব্যক্তির কবরের উপর বা পাশে কুরআনের আয়াত, দোয়া, কবিতা বা প্রশংসা-স্তুতিমূলক বাক্য লিখে রাখাও নিষেধ। হাদীস শরিফে কবরে লিখতে নিষেধ করা হয়েছে। অবশ্য কবর পরিচয়ের স্বার্থে কবরের পাশে মৃতের নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিখে রাখার অনুমতি রয়েছে।’

সাথে সাথে যারা কবরস্থানে কাজ করবে তাদের জন্য মাওলানা ফয়যুল্লাহ পরামর্শ হলো, কবর এমন একটি জায়গা যেখানে গেলেই মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। হাদীসেও মৃত্যুর কথা স্মরণ করাতে আদেশ করা হয়েছে।  তাদের যেহেতু সেখানেই বেশি সময় কাটে তাই তারা যেন এই সুযোগটি গ্রহণ করে মৃত্যুকে স্মরণ করে এবং পাপকাজ থেকে বিরত থাকে। আর তাদের জন্য বিশেষভাবে ও জীবিত সবার জন্যই কর্তব্য হল, মৃতব্যক্তির সম্মানহানী হয় এমন কোনো আচরণ কবরের সাথে না করা। যেমন কবরের উপর চলাচল করা, বসা ইত্যাদি। হাদীসে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে।’

অবশ্য ঘন জঙ্গল হয়ে গেলে তা পরিষ্কার করা যাবে। অনুরূপ শুকনো ঘাস, ডালপালা থাকলে তা পরিষ্কার করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘কবর জিয়ারতের কোনো নির্ধারিত দিন-তারিখ নেই। বিশেষ কোনো সময়ও নেই। যে যার সুযোগ অনুযায়ী কবর জিয়ারত করবে। যদি কারো জুমার দিন ছাড়া কবর জিয়ারতের সুযোগ না হয় তাহলে সে এ দিনও জিয়ারত করতে পারে। তবে এই দিন ‍জিয়ারত করাকে বিশেষ ফজিলতের মনে করা ঠিক নয়।

কবর জিয়ারতের সুন্নত তরিকা হচ্ছে কবরের কাছে গিয়ে সালাম দিবে। এরপর কবরকে পিছনে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের জন্য এবং কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। এছাড়া চাইলে কুরআন মাজিদ থেকে কিছু অংশ তেলাওয়াত করে কবরবাসীর জন্য ইসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা তা মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩২১৬)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, তা আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩২১৬)’

অন্যকে দিয়ে দোয়া করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দোয়া নিজের আপনজনের জন্য নিজেই করবে। অন্যের মাধ্যমে কেন করবে? আল্লাহ তাআলার দুয়ার সবার জন্য সর্বদাই উন্মুক্ত। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করার জন্য অন্য কারো সহযোগিতা নিতে হবে-এমন ধারণা শরিয়তসম্মত নয়। কেউ যদি নিতান্ত করায়ই তাহলে মাসয়ালা হলো, তা বিনিময়হীন হতে হবে। কেননা মৃতের জন্য দোয়া করে, কুরআন শরিফ পড়ে বিনিময়ে কোনো অর্থ গ্রহণ করা বৈধ নয়। দাতার জন্যও তা দেওয়া নাজায়েজ। এর দ্বারা মৃতের কোনো উপকার হবে না।

মৃতের জন্য কুরআন শরিফ পড়া এবং গরিবদেরকে দান-সদকা করা ও খাওয়ানো উভয়টিই পৃথক পৃথক ইসালে সওয়াবের মাধ্যম। তবে একটিকে অপরটির বিনিময় বানানো যাবে না। কেউ মৃতের জন্য অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে ইসালে সওয়াব করতে চাইলে কুরআন খতমের জন্য টাকা ব্যয় না করে ওই টাকা সরাসরি গরিবদেরকে দান করে দেবে। অথবা এর দ্বারা তাদের খাবারের ব্যবস্থা করবে। এটিই সঠিক পদ্ধতি। আসলে মৃতের জন্য যদি কিছু করতে হয় তবে তা কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেকই করতে হবে। না হলে তা মৃতব্যক্তির উপকারে আসবে না। আর এসব কিছু করার উদ্দেশ্য তো মৃতের উপকারই।

একজনের কবরের জায়গায় অন্যজনকে কবর দেয়া বৈধ বলে জানান তিনি। তবে কম সময়ের কবর, যেগুলোতে লাশ মাটি হয়ে যাওয়ার প্রবল ধারণা হয়নি সেখানে বিশেষ অপারগতা ছাড়া নতুন করে কবর দেওয়া যাবে না।

পূর্ববর্তি সংবাদবিধ্বস্ত ইন্দোনেশিয়ান বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার
পরবর্তি সংবাদরাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠক, তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত ৪ নভেম্বর