আবরার আবদুল্লাহ ।।
উলামায়ে কেরামের অংশগ্রহণে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে বিতর্কিত তাবলিগি আলেম মাওলানা সাদের অনুসারীরা। তাবলিগের কাজে উলামায়ে কেরামের অংশগ্রহণ, জেলায় জেলায় ওজাহাতি জোড়, মসজিদে-মাহফিলে আলেমদের আলোচনার কারণে সাধারণ তাবলিগি সাথীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাদপন্থীদের থেকে।
তারপরও নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে মরিয়া তারা। একের পর এক কৌশল অবলম্বন করে সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তারা।
এবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তাদের ঘোষিত জোড় ও ইজতেমা করার জন্য উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করলেন সাদপন্থীরা। নতুবা ইজতেমার মাঠ দখলে সংঘাত ও সংঘর্ষের হুমকিও দিয়েছে তারা।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার ডিআরইউতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এড. ইলিয়াস মোল্লা।
এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হেফাজতপন্থীরা মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল করে রেখেছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে তারা আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় এবং ১১ থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমার করার ঘোষণা দেয়।
ঘোষণায় বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বর শুক্রবার থেকে টঙ্গির ময়দানে পুরানো সাথীদের ৫ দিনের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় ৬ লাখ মানুষ জমায়েত করা হবে বলেও দাবি করে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উলামায়ে কেরামকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, যদি মাদরাসার ছাত্রদের কেউ রাজনৈতিক হীনস্বার্থে উস্কে দিয়ে সেদিন কোন প্রকার, দুঃঘটনা বা সংঘর্ষ বা সংঘাত ঘটায়, তাহলে এর দায়-ভার অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসার শিক্ষক, মুহতামিম, কতৃপক্ষকেই নিতে হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনের আগের দিন মাওলানা সাদের অনুসারীরা সংবাদকর্মী পাঠানোর আবেদন করে গণমাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন জনৈক তৌহিদুল হক। চিঠিতে সংযুক্ত তার মোবাইল ফোন নম্বরে কথা বলে জানা গেলো আরও অনেক কথা।
তিনি জানালেন, তাদের ঘোষিত জোড় ও ইজতেমা যথা সময়ে করার জন্য ইতিমধ্যে প্রশাসনের সব স্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজও (২৭ নভেম্বর ২০১৮) ডিসির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা।
এ সময় তিনি মাদরাসার ছাত্র দিয়ে মাঠ দখল করে রাখার কথা উল্লেখ করেন। বলেন, ‘আমরা তাবলিগের মূলধারা হওয়ার পরও প্রশাসন আমাদের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। আমাদের জোড়গুলো হতে দিচ্ছে না, কিন্তু তাদের ওজাহাতি জোড় ঠিকই হচ্ছে।’
জোড় ও ইজমেতা করার জন্য সাদপন্থীদের মাঠ দখলের ইচ্ছে আছে কিনা জানতে চাইলে বলা হয়, ‘কেউ যদি অবৈধভাবে মাঠ দখল করে রাখে তাহলে আমরা সেখানে যাবো না!?’
আপনারাই তো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন। তারপরও সেখানে যাবেন আপনারা? ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমল করতে যাবো। কিন্তু কেউ যদি বাধা দেয় এবং সংঘাত হয় তাহলে কি করার থাকবে? আমরা প্রশাসনকে বলছিই তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে জোড় করার সুযোগ করে দেন। আমাদের তো জোড় করাই লাগবে।’-উত্তর দেন তৌহিদুল হক।
যে কোনো মূল্যে তারা ইজতেমার মাঠে জোড় ও ইজতেমা করবেন এবং তাতে সংঘাত-সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি হলেও পিছু হটবেন না বলে জানান তিনি।
