ইসলাম টাইমস ডেস্ক: গতকাল ‘মাওলানা মামুনুল হক আটক’ শিরোনামে ইসলাম টাইমসে সংবাদ প্রকাশ এবং অপরাপর কোনো কোনো গণমাধ্যমে ‘আটকের অভিযোগ’ লেখা নিয়ে লঘু বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে কিছু কঠোর শব্দও উচ্চারণ করেছেন। অনেকেই আবার বিষয়টি জানতেও চেয়েছেন। সেজন্যই এই ছোট্ট নোটের অবতারণা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা যে কোনো নাগরিককে ধরে নিযে গেলে- সেটা যত অনানুষ্ঠানিকই হোক- ‘আটক’ শব্দটি গণমাধ্যমে লেখা হয়, লেখা যায়। এটাই বিধিসম্মত।
আনুষ্ঠানিক পরোয়ানাসহ ধরে নিয়ে গেলে কিংবা ধরে নিয়ে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায় গ্রহণ করলে লেখা হয়- গ্রেফতার।
‘আটকের অভিযোগ’ কথাটি গণমাধ্যমে দু ক্ষেত্রে বলা হয়। যখন কাউকে আটকের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় না, (২) কাউকে আটক করার খবরটি প্রচারের বিষয়ে কোনো গণমাধ্যম যখন নিজেকে দায়মুক্ত রাখতে চায় বা দায় এড়িয়ে যেতে চায়।
কোনো নাগরিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তারা স্বীকার না করলে কিংবা মামলা না করলে ‘আটক’ শব্দটি লেখা যাবে না- এমন কোনো নিয়ম গণমাধ্যমের বিধিতে নেই। অবশ্য ‘গ্রেফতার’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে আটক করা হলে।
‘আটক’ আর ‘গ্রেফতার’ শব্দ দুটির প্রয়োগ একরকম নয়।
একজন বিশিষ্ট নাগরিককে নিশ্চিতভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ‘আটকের অভিযোগ’ না লিখে সরাসরি ‘আটক’ শব্দটি লিখলে সে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার রাখে – এমন ধারণা ও সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।
সংবাদ-শিরোনামে অভিযোগ, উদ্ধরণ চিহ্ন, আশ্চর্যবোধক চিহ্ন বা প্রশ্নবোধক চিহ্নের ব্যবহার করা হয় গণমাধ্যমের দায়মুক্তির জন্য, দায় এড়ানোর জন্য। প্রতিষ্ঠিত বহু গণমাধ্যম এসব শব্দ বা চিহ্ন খবরটিকে হালকাভাবে উপস্থাপনের জন্যও ব্যবহার করে থাকে।
প্রতিষ্ঠিত জাতীয় গণমাধ্যমের সব খবরের ভাষা অনুসরণযোগ্য নয়। গ্রেফতার ও আটকের সংবাদগত অর্থও এক নয়।
এখনো পর্যন্ত সাংবাদিকতার ভাষা, রীতি, নীতি ও প্রবণতা নির্ণয়ে বিশিষ্টজনের অভিমত ও অবস্থান এ রকমই। সময়ে সময়ে এসব রীতি বদলে যেতে থাকে। যে কেউ নিজেকে বদলে নিতেও পারেন, আবার অটলও থাকতে পারেন- এটা তার ইচ্ছা, তার সংবাদমাধ্যমের ইচ্ছার ব্যাপার।
