ইসলাম টাইমস ডেস্ক : ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় সদ্য অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক গণভোটে ‘অধিকতর স্বায়ত্ব শাসনে’র পক্ষে ভোট দিয়েছে স্থানীয় অধিবাসীরা। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী ‘হ্যাঁ ভোট’ জয়যুক্ত হয়েছে। ফলে অধিকতর স্বায়ত্ব শাসন ও সম্প্রসারিত অঞ্চল নিয়ে মুসলিম বাংশোমারো অঞ্চল গঠনের প্রক্রিয়া আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো।
গত সোমবার (২১ জানুয়ারি)ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের মিন্দানাও, লানাও দেল সুর, বাসিলান দ্বীপপুঞ্জ, কোটাবাটো ও ইসাবেলার শহর তাওটি-তাওটি ও সুলুতে এই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পাঁচটি অঞ্চল ‘স্বায়ত্ব শাসিত’ মুসলিম মিন্দানাও প্রদেশে অবস্থিত। শেষের শহর দুটি মিন্দানাওয়ের বাহিরে অবস্থিত।
গণভোটে ভোটারদের কাছে জানতে চেয়েছে যে, তারা মিন্দানাওকে সম্প্রসারিত মুসলিম বাংশোমারো স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলের সাথে একীভূত হতে চায় কী না? গণভোটের ফলে মিন্দানাও মুসলিম স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলকে সম্প্রসারিত বাংশোমারো মুসলিম অঞ্চলের সাথে একীভূত করে নতুন আইন পাস করবে দেশটির সরকার।
দেশটির নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে যে, কোটাবাটো শহরে ‘হ্যা’ ভোট পড়েছে ৩৬ হাজার ৬৮২টি আর ‘না’ ভোট পড়েছে ২৪ হাজার ৯৯৪টি। মিন্দানাও অঞ্চলে ‘হ্যা’ ভোট পড়েছে ৬ লাখ ৮ হাজার। বিপরীতে ‘না’ ভোট পড়েছে ৯ হাজারের মতো।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বুধবার গণভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে। তবে ফিলিপাইনের মুসলিম অধ্যুষিত এসব অঞ্চলের মানুষ ইতোমধ্যে বিজয় উদযাপন শুরু করেছে।
ঐতিহাসিক এই গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে মূলত গত বছরের (২০১৮) জুলাইতে সরকার ও মোরো ইসলামিক লেবারেশন ফ্রন্ট-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির ভিত্তিতে যাকে যাকে ‘বাংশোমারো অরগানিক ল’ নামে অবহিত করা হয়।
এই আইনে মিন্দানাও অঞ্চলের অধিকতর স্বায়ত্ব শাসন ও তার ভৌগলিক সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছে। সম্প্রসারণের ব্যাপারে মিন্দানাওয়ের পার্শ্ববর্তী দ্বীপসমূহে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি বাংশোমারো স্বায়ত্ব শাসনের উপর শেষ দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
নতুন আইন অনুযায়ী বাংশোমারোতে নতুন সরকার গঠিত হবে এবং সম্প্রসারিত প্রদেশের রাজধানী হবে কোটাবাটো সিটি। এই অঞ্চলের জন্য একটি মুসলিম কোর্ট তথা বিচারিক ব্যবস্থাও প্রতিষ্ঠিত করা হবে।
আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ম্যানিলা সরকার বাংশোমারো সরকারের হাতে আঞ্চলিক কর্তৃত্ব হস্তান্তর করবে। তবে খনিজ সম্পদ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সামরিক বাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকবে। এছাড়াও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আঞ্চলিক সরকার ম্যানিলা সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
স্বাধীনতাকারী ‘দ্য মোরো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ এবং ‘মোরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট’ যৌথভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করবে।
সূত্র : আনাদুলু এজেন্সি থেকে ‘আবরার আবদুল্লাহ’-এর অনুবাদ
