দেওবন্দের শুরা সদস্য মাওলানা ইয়াকুব কাসেমির ইন্তেকাল, ভারতজুড়ে শোক

আবরার আবদুল্লাহ ।।

গতকাল ভারতের বিশিষ্ট আলেম, দারুল উলুম দেওবন্দের শুরা সদস্য ও তামিলনাড়ুর আমিরে শরিয়ত মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াকুব কাসেমি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার ইন্তেকালে ভারতের বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম ও দ্বীনদার সাধারণ মুসলমানরা গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

তারা বলেন, মাওলানা ইয়াকুব কাসেমি ছিলেন আকাবিরে উম্মতের জীবন্ত নমুনা। তার মৃত্যুর মাধ্যমে ভারতে আকাবিরে উলামার একটি যুগের সমাপ্তি হলো। ভারতীয় মুসলিমরা একজন দরদি অভিভাবক হারালো।

দারুল উলুম দেওবন্দের মোহতামি মুফতি আবুল কাসেম নোমানি এক শোকবাণীতে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে উম্মতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। তিনি জাতির জন্য নিবেদিতপ্রাণ সেবক ছিলেন। অসামান্য ইলমি খেদমত করেছেন।

মুফতি আবুল কাসেম নোমানি মরহুমের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

দারুল উলুম ওয়াকফ দেওবন্দের মোহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ সুফিয়ান কাসেমি বলেন, ‘তিনি ছিলেন আকাবির-আসলাফের দৃষ্টান্ত। তিনি সারা জীবন উম্মতেরে খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা একজন অভিভাবক হারালাম।

ভারতের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা শরিফ খান কাসেমি বলেন, মাওলানা ইয়াকুব কাসেমি জ্ঞানত, সংস্কারমূলক ও উম্মাহের কল্যাণে যে অসামান্য অবদান রেখেছেন তা তাকে স্মরণীয় করে রাখবে। তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায়ে কাসিফুল হুদা দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি আমিরে শরিয়ত হিসেবে এবং তামিলনাড়ুর খতমে নবুওয়াতের নেতা হিসেবেও দ্বীনি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

জামিয়া কাসেমিয়া দারুত তালিমের মোহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহিম কাসেমি বলেন, ‘মাওলানা ইয়াকুব কাসেমির ইন্তেকালে ভারতীয় মুসলমানের অনেক বড় ক্ষতি হলো। দ্বীনের প্রতি নিবেদিত এমন অভিভাবক এই সময়ে বিরল। তিনি তার ত্যাগ, কুরবানি ও সেবার মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

একইভাবে শোক প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর সভাপতি মাওলানা কারী সাইয়েদ মুহাম্মদ উসমান মানসুরপুরী ও সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মাহমুদ মাদানী। তারা বলেন, মাওলানা ইয়াকুব কাসেমি ছিলেন আকাবিরে উম্মতের জীবন্ত নমুনা। তিনি তার জীবনকে উম্মতের ব্যক্তিগত ও সামাজিক, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ইসলাহের কাজে উৎসর্গ করেন। এছাড়াও তিনি উত্তর ভারতের মুসলমান ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ছিলেন।

উল্লেখ্য, মাওলানা ইয়াকুব কাসেমি গতকাল রোববার ফজরের সময় চেন্নাইতে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের শুরা সদস্য, তামিলনাড়ুর আমিরে শরিয়ত, মাদরাসায়ে কাশিফুল হুদার শায়খুল হাদিস ছিলেন।

গতকাল আসরের নামাজের পর জানাযা শেষে তাকে তামিলনাড়ুর মিল-ওয়া-শার্ম এলাকায় দাফন করা হয়।

মাওলানা ইয়াকুব কাসেমি হজরত মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানি রহ.-এর একনিষ্ঠ শাগরিদ ছিলেন এবং তিনি মুফতি আবদুল ওয়াহাব দেলওয়ারির পর তামিলনাড়ুর আমিরে শরিয়ত নির্বাচিত হন।

বলা হয়, হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.-এর চিন্তা-চেতনা ও ফিকরের ধারক ছিলেন তিনি। হজরত মাদানি রহ.-এর মতো দেশ, জাতি, উম্মাহ ও মাদরাসা নিয়ে তিনি চিন্তিত থাকতেন সব সময়।

সূত্র : বাসিরাত অনলাইন, ডেইলি সিয়াসাত

পূর্ববর্তি সংবাদঅমুসলিমদের সালামের জওয়াবে বিধান কী?
পরবর্তি সংবাদযৌন হয়রানির অভিযোগে একুশে টিভির সাংবাদিক গ্রেফতার