শিবির সভাপতির দাওরা পরীক্ষা: সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা

ইসলাম টাইমস প্রতিবেদন: হাইআতুল উলয়ার অধীনে অনুষ্ঠিত দাওরায়ে হাদীসের তৃতীয় কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল ৩ জুলাই প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেছে ইসলামি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোবারক হুসাইন দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষায় জায়্যিদ জিদ্দান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। শিবির সভাপতির দাওরার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

কেউ কেউ উদারতার কথা বলে ভবিষ্যতে তাদের সাথে বোঝাপড়ার সম্ভাবনায় মোবারক হুসাইনের এই কাজকে সাধু্বাদ জানিয়েছেন।

তবে সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, একটা বড় অংশ শিবির সভাপতির দাওরা পরীক্ষা দেওয়ার সমালোচনা করছেন। তাদের প্রশ্ন হল ভারতের রাজস্থান থেকে পিএইচডি করা একজন কেন দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষা দিবে? এর উদ্দেশ্য কী?

সঠিক ইসলামি শিক্ষার সুযোগ প্রত্যেকেরই আছে স্বীকার করে সমাজের এ অংশটির আপত্তি হলো, কওমি মাদরাসা শুধু পরীক্ষা পাশের কোনো প্রতিষ্ঠান না। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সুযোগ  নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গেলেই তাকে কামিয়াব বলা যাবে না। বরং ব্যক্তির চিন্তার বিশুদ্ধতা, সঠিক আদর্শ ও বাহ্যিক গঠন দেখেই কওমি অঙ্গনে একজনকে আলেম হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়।

এ শ্রেণির লোকদের বক্তব্য হলো, কওমি মাদরাসা স্বতন্ত্র আদর্শ ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। কওমি মাদরাসা থেকে কাউকে শিক্ষা-সনদ নিতে হলে তাকে অবশ্যই সে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে সে আদর্শের অনুসারী হতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা অনুসরণ না করে শুধু পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে সনদ গ্রহণের ধারা চালু হয়ে গেলে কওমি মাদরাসার আদর্শ হুমকির মুখে পড়বে।

এদিকে শিবির সভাপতির পরীক্ষা দেওয়ার কারণ হিসেবে হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষা-ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন অনেকে। কীভাবে একজন পূর্ব সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই দাওরায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে যায়- সামাজিক মাধ্যমে এ প্রশ্নটিও ঘুরেফিরে বারবার দেখা দিচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কথা বলা হয় হাইআতুল উলয়ার এক দায়িত্বশীলের সাথে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইআতুল উলয়ার এ দায়িত্বশীল ইসলাম টাইমসকে বলেন, বোর্ডের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। তবে আমরা শিগগির সে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগে ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসায় অনুষ্ঠিত বোর্ডের এক মিটিং-এ সিদ্ধান্তও হয়েছে- কওমি মাদরাসা ভিত্তিক দেশের পরিচিত ৬ শিক্ষাবোর্ডের কোথাও থেকে মিশকাত জামাতের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী দাওরার পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

হাইআতুল উলয়ার এ দায়িত্বশীল আরও জানান, ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা ও বিদ্যমান অসংগতিগুলো দূর করতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ সবসময় তৎপর। খুব দ্রুতই আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেজন্য কর্তৃপক্ষ সময়ে সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও করে থাকেন।

পূর্ববর্তি সংবাদরাজনৈতিক প্রশ্রয় ছাড়া নয়ন বন্ডরা তৈরি হতে পারে না : তোফায়েল
পরবর্তি সংবাদপশ্চিমবঙ্গে ‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধর