ইসলাম টাইমস ডেস্ক: আয়া সোফিয়ার মসজিদে প্রত্যাবর্তন এক দিকে মুসলমানদের ব্যথিত মনে যেমন আশা ও সান্ত্বনার পরশ বুলিয়ে দিয়েছে, তেমনি আরেকদিকে একে কেন্দ্র করে খৃস্টান বিশ্ব হিংসার আগুনে জ্বলছে।
আয়া সোফিয়ার মত মুসলমানরা আশা করে, একদিন কর্ডোভা ও মসজিদুল আকসাও তারা ফিরিয়ে নিতে পারবে। কয়েকদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ প্রদেশের আমীর ড. সুলতান বিন মুহাম্মদ এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা গীর্জায় রূপান্তরিত হওয়া কর্ডোভা মসজিদ ফিরে পাবার প্রতীক্ষায় আছি। আয়া সোফিয়া নিয়ে তুর্কি সরকারের ঐতিহাসিক এ সিদ্ধান্ত আমাদের মনোবল বৃদ্ধি করেছে।
এদিকে খৃস্টান বিশ্ব সমালোচনায় যতই সরব হচ্ছে, ততই রান্না ঘরের কাসুন্দি ঘাঁটার মত এতদিন পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খৃস্টান জাতি কর্তৃক মসজিদকে গীর্জা বানানোর চেপে রাখা ইতিহাসগুলো আবার সামনে আসতে শুরু করেছে।
এক্ষেত্রে সবার আগে আসে স্পেনের কর্ডোভা মসজিদের কথা, যা মসজিদ-ক্যাথড্রেল হিসাবেও প্রসিদ্ধ, এবং যা পৃথিবী বিখ্যাত ইসলামী নিদর্শনগুলোর একটি। এ মসজিদটি এখন একটি স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অথচ এই স্থাপনার ক্যাথড্রেল অংশে ঠিকই চার্চের কাজ হয়।
![File:Granada san jose torre alminar califal.jpg](https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/8/88/Granada_san_jose_torre_alminar_califal.jpg/449px-Granada_san_jose_torre_alminar_califal.jpg)
কর্ডোভা মসজিদটি উমাইয়া খলীফাদের দ্বারা ৭৮৬-৯৩৩ এর মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত হয়েছে। এক সময়ের পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদটি প্রথমে পরিণত করা হয়েছে চার্চে, পরে ১৩শ শতকে এটাকে বানানো হয়েছে ক্যাথড্রেল যখন খৃস্টানরা পুনরায় এই এলাকা দখল করে। সময়ের পরিক্রমায় মসজিদটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সে সাথে এর মিনার ভেঙ্গে বানানো হয়েছে খৃস্টানদের বেল টাওয়ার ঘন্টা বাজানোর জায়গা।
১৯৮৪সনে ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে স্বীকৃতি লাভের পর এই স্থাপনাটিকে মসজিদ কাম ক্যাথড্রেল হিসাবে অভিহিত করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হল মসজিদ শুধু নামেই। বছরের বিভিন্ন সময় এটিকে ক্যাথড্রেলি হিসাবে ব্যবহার করা হলেও এটা নামাজের কখনো ব্যবহার হয় না। বরং সব সময় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবেই ব্যবহার হয়।
যদিও স্পেনের মুসলমানরা কর্ডোভার মসজিদ কাম ক্যাথড্রেলকে নামাজের উম্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু তাদের সে দাবি দাবিই থেকে গেছে। এখনো বাস্তবতার মুখ দেখেনি।
![Mosque of Cristo de la Luz](https://img.traveltriangle.com/blog/wp-content/tr:w-700,h-400/uploads/2018/08/Mosque-of-Cristo-de-la-Luz-shutterstock_420535633.jpg)
স্পেনে মুসলমানদের আরেকটি নিদর্শন, যেখানে নামাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেটা হল গ্রানাডার আল হামরা প্রাসাদের ভেতরের মসজিদ, যা দেশটির প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি।
গ্রানাডায় অবস্থিত দেশটি প্রচীনতম মসজিদ, মসজিদে মুরাবিতিন, ১৬ শতকেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে সেটি আল মিনার ডি সান জোস নামে একটি চার্চ হিসাবে সংস্কার করা হয়। এই মসজিদের মিনারকেও বানানো হয়েছে খৃস্টানদে বেল টাওয়ার বা ঘন্টা বাজানোর টাওয়ার।
![Seville Cathedral](https://img.traveltriangle.com/blog/wp-content/tr:w-700,h-400/uploads/2018/08/Seville-Cathedral-shutterstock_694293403.jpg)
সেভিলা প্রদেশে অবস্থিত ক্যাথড্রেল ডি সেভিল্যা, যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্যাথড্রেলগুলোর একটি, এটিও মূলত আল মুহাদ মসজিদের ভগ্নাংশ, যা ১১৮২ সনে নির্মিত হয়ে এবং ১৪৩৩ সনে ধ্বংস করে দেওয়া হয় যখন স্পেন খৃস্টান কর্তৃক বেদখল হয়।
বাব মারদুম মসজিদ, যা ক্রিসটু ডি লা লুজ মসজিদ নামেও প্রসিদ্ধ, নির্মিত ৯৯৯সনে, এটি ১০৮৫ সনে একটি চার্চে পরিণত করা হয়। বর্তমানে এটি পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডেইলি সাবাহ
![](https://www.islamtime24.com/wp-content/uploads/2021/03/20210308_200803-scaled.jpg)