ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বাংলাদেশকে নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার তুমুল আলোচনা সৃষ্টিকারী প্রতিবেদন করার কারণে ‘আল জাজিরার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশে আল জাজিরা চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ এবং বাংলাদেশ নিয়ে তাদের প্রতিবেদনের কারণে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না– এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাবলিক বুঝেছে এটা মিথ্যা। তবে যেগুলো তথ্যগত ভুল বা বিকৃতি সে বিষয়ে আমরা দেখব এবং আমরা মামলা করব। আমরা সেটার কাজ করছি।’
আরো পড়ুন: আলজাজিরার প্রতিবেদন মিথ্যা প্রমাণিত হলে স্বেচ্ছায় ফাঁসি নেবেন নুর
আল জাজিরার প্রতিবেদন হয় মিথ্যা প্রমাণ করুন, না হয় পদত্যাগ করুন: চরমোনাইর পীর
আলজাজিরার প্রতিবেদন: সরকারের কাছ থেকে বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যার অপেক্ষায় বিএনপি
কী আছে আল-জাজিরার সেই প্রতিবেদনে? সরকার ও বিশিষ্টজনেরা কী বলছেন?
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদন নিয়ে আজকে একটা ভালো লেখা বের হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের বোরহান কবির লিখেছেন। উনি অনেক টেকনিক্যাল জিনিস তুলে ধরেছেন। প্রতিবেদনে অনেক বিষয় খুব সুন্দর করে এডিটিং করা হয়েছে। যা সাধারণ পাবলিক বুঝবে না।’
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিনি। ওনাকে এখন এসএসএফ গার্ড দেয়। কিন্তু ওনার এই ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কোনোদিন কোনো বডিগার্ড ছিল না। ওনার বডিগার্ড হলো ওনার সব নেতাকর্মীরা। কোনোদিন আমরা দেখিনি উনি পয়সা দিয়ে বডিগার্ড রেখেছেন। ওখানে (আল জাজিরার প্রতিবেদনে) বলা হয়েছে, ওনার দুই বডিগার্ড… এখন নেত্রী যখন বক্তৃতা দেন পেছনে অনেক লোক দাঁড়ান। আমিও যখন বক্তৃতা দেই আমার পেছনে বহু লোক দাঁড়ায়। আমি তাদের খুব কম লোককেই চিনি। কিন্তু ওখানে (আল জাজিরার প্রতিবেদনে) একজনের ছবি দিয়ে বলছে, ওটা ওনার (শেখ হাসিনার) বডিগার্ড। এই রকম মিথ্যা তথ্য! এটা এভাবে টেকনিক্যালি জোড়াতালি দিয়ে করেছে যে কারণে আল জাজিরা অনেক ক্রেডিবিলিটি হারিয়ে ফেলেছে।’
এখনও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দেশকে দরিদ্র হিসেবে তুলে ধরা হয়– একথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিদেশিরা তুলে ধরে না। আমাদের লোকেরাই এগুলো চিত্রায়িত করে মনে আনন্দ পায়। ফলে তাদের মনমানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের দেশে এটা দেখানো হয় বলেই বিদেশিরা এটা পিক করে। আমরা দরিদ্র ছিলাম– এটা সত্য। এখন অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আপনাদের মিডিয়াতে এই তুলনামূলক পরিবর্তনের চিত্রটা দেখি না।’
শুক্রবার রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি দলের পরিদর্শন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা আছেন তাদের ক্যাম্পে মিলিটারি কমান্ডাররা গিয়েছে। তখন তাদের মুরুব্বিরা তাদের অভিযোগের কথা বলেছে এবং সেনা কর্মকর্তারা ধাপে ধাপে তাদের অবস্থার পরিবর্তন করার কথা বলেছে। এগুলো শুনে কক্সবাজারের কুতুপালং এলাকায় ক্যাম্পে খুব খুশি লোকজন, যে আর্মি তাদের একটা অভয় দিয়েছে। এটা ভালো খবর। ভালো শুরু।’
এটা বাংলাদেশের জন্যও ভালো খবর কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য পেয়েছি। তবে আমাদের তো ভেরিফায়েড তথ্য পেতে হবে। তাদের সরকার আগে আমাদের বলুক।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ওদের (মিয়ানমার) নতুন সরকার আমাদের রাষ্ট্রদূতকে শুধু একটা চিঠি দিয়েছে যে, কী কারণে ওরা ক্ষমতা দখল করেছে। সেখানে তারা বলেছে, কী কারণে তারা ক্ষমতা নিয়েছে। তারা বলেছে যে, ১০.৪ মিলিয়ন ভুয়া ভোট হয়েছে যে কারণে তারা এটা করেছে। এরপর আর আমরা কোনো তথ্য পাইনি।’
-এসএন