মধ্যযুগে মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উপর নির্ভরশীল ছিলো ইউরোপ : আইরিশ ইতিহাসবিদ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : মুসলিম স্পেনই যে অন্ধকারাচ্ছন্ন ইউরোপকে আলোর পথ দেখিয়েছিলো তার আরেক প্রমাণ পাওয়া গেলো কিছুদিন আগে। আয়ারল্যান্ডে সদ্য আবিষ্কৃত একটি প্রাচীন পাণ্ডুলিপি বলছে মধ্যযুগে পশ্চাৎপদ ইউরোপ মুসলিম বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধের উপর নির্ভরশীল ছিলো।

সম্প্রতি আয়ার‌ল্যান্ডেপনের শতকের একটি পাণ্ডুলিপি আবিষ্কৃত হয়েছে। যা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের বিস্ময়কর সংযোগেরও প্রমাণও বহন করে।

আইরিশ ইতিহাসবিদ প্রফেসর প্যাডরিগ ও মাচিন বলেন, আমরা খুঁজে পেয়েছি যে, চতুর্দশ শতকের ইউরোপের চিকিৎসকরা মুসলিম চিকিৎসাবিদ ও জীববিজ্ঞানীর উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তারা মূলত ছিলেন পরশ্রমজীবী।

নতুন এই পাণ্ডুলিপি আরও প্রমাণ করে যে, বিখ্যাত মুসলিম বিজ্ঞানী ইবনে সিনা (৯৮০-১০৮৭) রচিত ‘আল কানুন ফিত-তিব’ মধ্যযুগে ইউরোপের তরুণ চিকিৎসকদের আবশ্য-পাঠ্য ছিলো।

ধারণা করা হচ্ছে, অ্যায়ারল্যান্ডের একদল চিকিৎসক মুসলিম স্পেনে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে যান এবং তারাই ইবনে সিনার আল কানুন-এর অনুবাদটি করে ব্রিটিশ আয়ারল্যান্ডে নিয়ে আসেন। যা পরবর্তীতে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়।

'Avicenna Fragment' removed from book and flattened so that it could be read

ও মাচিন বইটি পেয়েছেন কর্নওয়ালের সেলটিক অঞ্চলের একটি ব্রিটিশ পরিবারের কাছে। যা ১৫৩৪-৩৬ সালে মধ্যে প্রকাশিত হয়।

তিনি বলেন, আমি বইটির বাইন্ডিং পদ্ধতি দেখে আগ্রহী হয়ে উঠি। যা পুরোপুরি আইরিশ ভাষায় লেখা। পনের শতকের আইরিশ রচনা। সুন্দরভাবে ছাটাই করা, ভাঁজ করা এবং শক্তভাবে বাধাই করা। চামড়ার সাহায্যে এমন ধরনের উন্নত বাধাই তখন ইউরোপে ছিলো না –যা পরবর্তীতে ব্যবহৃত হয়েছে।

ওমাচিন প্রমাণ করেছেন যে, ইবনে সিনার আল কানুন ফিততিব –যাকে মেডিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া বলা হয়- আইরিশ ভাষায় অনূদিত হয়েছিলো। তবে তা হলেছিলো ল্যাটিন ভাষা থেকে। আইরিশ ভাষায় তা অনূদিত হওয়াই সমকালীন চিকিৎসা বিজ্ঞানে বইটির প্রয়োজনীয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ বহন করে।

ইবনে সিনা রচিত আল কানুন-এ ৭৬০ প্রকারের ওষুধ ও তা প্রয়োগের পদ্ধতির বর্ণনা রয়েছে। যা দ্বাদশ শতকেই ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত এবং ইউরোপের চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবশ্য-পাঠ্যের মর্যাদা।

২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আয়ারল্যান্ডে বর্তমানে ৬৫ হাজার মুসলিম রয়েছেন। আইরিশ বিশ্বকোষের বর্ণনা অনুযায়ী খিস্ট্রীয় দ্বাদশ শতকে আয়ারল্যান্ডে মুসলিমদের আগমন ঘটে। মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক আল ইদরিসির বর্ণনায়ও আয়ারল্যান্ডের কথা পাওয়া যায়।

ইন্ডিপেনডেন্ট.আইই থেকে আবরার আবদুল্লাহ-এর অনুবাদ

পূর্ববর্তি সংবাদ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে, ড. কামাল
পরবর্তি সংবাদশুরু হয়েছে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ